কুমিল্লা এনজিও পোর্টাল এ সবাইকে স্বাগতম
গ্রাম উন্নয়নের উপর প্রশিক্ষনদান ও গবেষণার জন্য তৎকালীন কেন্দ্রিয় সরকার পাকিস্তানের উভয় অংশে একটি করে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। তারই ফলশ্রুতিতে কুমিল্লা একাডেমি ১৯৫৮ সনে স্থাপিত হয়। এই একাডেমি কিছু সময় কুমিল্লা শহর ও অভয় আশ্রামে কাজ চালানোর পর ১৯৬৩ সনে স্থায়ীভাবে কোটবাড়িতে নিজস্ব নির্মিত ভবনে স্থাপিত হয়। একাডেমি স্থাপনের প্রাথমিক লক্ষ্য-প্রশিক্ষণ ও গবেষণা থাকলে ও কয়েক মাস যেতেনা যেতেই এর প্রথম পরিচালক বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ড. আখতার হামিদ খানের উদ্যোগে পল্লী উন্নয়নেরর সার্থক উপায় উদ্ভাবনের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু করা হল। কুমিল্লার মাটি ও মানুষকে নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে গ্রাম উন্নয়নের এক সফল মডেল “কুমিল্লা মডেল বা কুমিল্লা পদ্ধতি” উদ্ভাবন করা হয়। কুমিল্লা মডেলের যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মসূচী জাতীয়ভাবে গৃহীত হয়েছে এবং এখনো চলমান তা হলো
-
১. পল্লী পূর্ত কর্মসূচী
২. থানা সেচ কর্মসূচী
৩. দু’স্তর বিশিষ্ট সমবায়
৪. পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী
৫. থানা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র (থানা পরিষদ যা বর্তমানে উপজেলা পরিষদ সহ)
আমাদের দেশের বেশীর ভাগ কৃষকই ক্ষুদ্র জোতের মালিক। শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ কৃষকের জমির পরিমান ২ একর বা তার ও কম। এই অসংখ্য ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের সীমাহীন সমস্যার মধ্যে কৃষিকাজ করতে হয়। এদের নিজস্ব পুঁজি নেই। অনেকের চাষাবাদের জন্য হাল-গরু নেই। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও সামর্থ নেই। পুজির অভাবে ফড়িয়া- মহাজনের শোষণের শিকার এরা অথচ উৎপাদন ক্ষেত্রে এরাই আমাদের সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ, আশা ভরসার স্থল । কুমিল্লা জেলায় পল্লী উন্নয়নে যুগান্তকারী সফলতা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান বার্ডের উপস্থিতির কারণে এনজিও এবং দাতা সংস্থাদের কুমিল্লায় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে কিছুটা জড়তা ও নির্লিপ্ততা ছিল। কিন্তু কিছু কালের মধ্যে যখন জানাগেল কুমিল্লার সমূহ সম্ভাবনার বিষয়সমূহ- উদ্যোগী কৃষক, উর্বর জমি এবং বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে ধান, সবজী,মাছ, গবাদিপশু পালন, খাদি ও কুটির শিল্প সবোপরি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত অবস্থা, তখন জাতীয় এনজিও গুলো একে একে কুমিল্লা জেলার সাধারণ মানুষের উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করতে এসে হাজির হয়েছে। সুখের কথা জাতীয় এনজিও গুলোর কুমিল্লায় আগমনের পূর্বে থেকে এতদঞ্চলের স্থানীয় অনেকগুলো সংস্থা প্রধানতঃ সরকারী কার্যক্রমের সহায়তা সমাজ কল্যাণবিভাগ, মহিলা ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তাপুষ্ট স্থানীয় এনজিও এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণে উন্মুখ সাধারণ জনগণ । সর্বোপরি বার্ড সৃষ্ট উন্নয়ন আবহ-এই সবকিছু পুঁজিকরে আমরা যদি এগিয়ে যাই। তাহলে অবশ্যিই কাঙক্ষিত লক্ষ্যে পৌছা সম্ভব। কুমিল্লার সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি কিংবা আরো স্পষ্ট করে বললে পরিপূরক হিসেব এনজিওরা যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তার বিবরণ এই ওয়েব পোর্টাল কিছুটা উল্লেখিত হয়েছে। এনজিওদের চলমান কার্যক্রম সমূহে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা-স্বস্থ্য-পরিবেশ উন্নয়ন, গৃহায়ন, ওয়াটারসান, কুটি শিল্প উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা রোধ, দূর্নীতি-সন্ত্রাস-মাদক-পাচার প্রতিরোধ তথা সব ধরনের উন্নয়ন ধর্মী উদ্যোগ অর্তভূক্ত।
২০২২ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের অনুপ্রেরনায় কুমিল্লার সকল এনজিও তথ্য সম্বলিত ওয়েব পোর্টাল খুলা হয়েছে। ওয়েব পোর্টাল খোলার মাধ্যমে সকল সংস্থার স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। সকল সংস্থার তথ্য ২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সকলের সামনে সংস্থার তথ্য উন্মোচিত হয়েছে এবং জেলা প্রশাসন সহ সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার সাথে সুসর্ম্পক স্থাপন হবে। আশা করছি সংস্থার কাজের মাধ্যমে ওয়েব পোর্টাল কুমিল্লার এনজিও সেক্টর এর নতুন যাত্রা শুরু হবে।